ভারতে করোনা সংক্রমণ এড়াতে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছে না জনগণ। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই তাই চ্যালেঞ্জের মুখে। শুধু চলমান মহামারীর কালেই নয়, দীর্ঘদিন ধরে দেশটির বেশ কয়েকটি রাজ্যে পানীয়জলের সংকট চলছে। পরিষ্কার পানি পৌঁছায় না লাখ লাখ মানুষের কাছে।
মহামারীর মধ্যে রাজ্যগুলোকে তাই নিরাপদ পানির সরবাহ ও তদারকি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। মঙ্গলবারই রাজ্য সরকারগুলোর কাছে এ বিষয়ে একটি অ্যাডভাইজরি জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। তাতে লকডাউনের বর্ধিত সময়কাল ৩ মে পর্যন্ত নিরাপদ পানীয়জল সরবরাহ ও তদারকি সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
করোনা মোকাবেলায় ঘন ঘন হাত ধোয়ার কোনো বিকল্প নেই। করোনা থেকে বাঁচতে সাবান পানি আর স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রতি বারবার জোর দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে করোনার এই ক্রান্তিকালে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে ভারতের জনগণ। তামিলনাড়–, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাট ও কেরালাসহ বিভিন্ন রাজ্যে অস্বাভাবিক পানিসংকটে নাজেহাল কোটি কোটি মানুষ। হাত ধোয়ার পানি নেই তাদের। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলোকে বিশেষ অ্যাডভাইজরি বা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রক বলেছে, ‘ভাইরাস ছড়ানো আটকাতে বারবার সাবানের ফেনা দিয়ে হাত ধোয়া সবচেয়ে সফল ও কার্যকর পদ্ধতি বলে চিহ্নিত হয়েছে। ফলে সংগ্রহযোগ্য জল নিরাপদ সমস্ত নাগরিকদের কাছে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, যেখানে মেডিক্যাল স্যানিটাইজার না পাবার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে বিশেষ করে পৌঁছনো সুনিশ্চিত করতে হবে।’
পানির ব্যবস্থাই নেই, হাত ধোবেন কী করে ওরা?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জারি করা অ্যাডভাইজরিতে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, বোর্ড ও কর্পোরেশনগুলোকে যেখানে জলের ঘাটতির সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিতে হয়েছে। বিশেষ নজর দেয়ার কথা বলা হয়েছে ত্রাণশিবির, কোয়ারেন্টিন এলাকা, হাসপাতাল, বৃদ্ধাবাস ও বস্তিতে। রাজ্য সরকারকে বলা হয়েছে ক্লোরিন ট্যাবলেট, ব্লিচিং পাউডার, সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট সলিউশন ও ফিটকিরির মতো শোধনকারী রাসায়নিক কত পরিমাণে লাগতে পারে তা খতিয়ে দেখতে। এসব দ্র্রব্য জরুরি পণ্যের তালিকায় রাখা হয়েছে।
রাজ্য সরকারগুলোকে জলের উৎস নির্দিষ্ট সময়ান্তরে পরীক্ষা করার জন্য গ্রামে ফিল্ড টেস্ট কিট পাঠাতে বলা হয়েছে এবং সারাক্ষণ জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। মানুষ এ সময় জল সংগ্রহ করার জন্য যদি অনেকে মিলে এক জায়গায় আসেন, সেখানে সামাজিক দূরত্ব বিধি মানার সুবিধার জন্য জল সরবরাহের সময়সীমা বাড়াতে বলা হয়েছে। এ সম্পর্কিত অভিযোগ প্রতিবিধানের ব্যবস্থাপনাতেও জোর দিতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলোকে।