নিরেন দাস,জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
প্রয়াত সিনিয়র প্রবীণ বিশিষ্ট সাংবাদিক শ্রী বিরেন চন্দ্র দাস এর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার। গত ২০২২-ইং সালে (২৯ শে জুন) বুধবার বিকেল ৪ টা ৪০ মিনিটে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল এন্ড কলেজ (শ.মে.ক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি সনাতন ধর্মের হলেও দারিদ্র্যতার কারণে আক্কেলপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় লেখাপড়ার পাশাপাশি সেই ছাত্র জীবন থেকেই তিনি তৎকালীন সময়ে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে গোনা কয়েকটি পত্রিকায় তিনি লেখালেখি শুরু করেন। এমন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দীর্ঘ ৫২ বছর সাংবাদিকতা করেন পাশাপাশি এবং দেশ ও জাতির জন্য সেইসময় সংগ্রাম, পূর্ব পাকিস্তানসহ এমন অসংখ্য পত্রিকায় লিখতেন। অবশেষে তিনি দারিদ্র্যতাকে হার মানিয়ে মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করে ঢাকায় অবস্থান করেন এবং দেশের আইন সংবিধান লেখক ড. কামাল এর সহকারী হিসেবে তিনি ঢাকায় অবস্থান করেন। শুরু করেন আবারো লেখাপড়া পাশাপাশি সাংবাদিক নির্যাচনের মূল নেতৃত্বেও তিনি ব্যাপক ভূমিকা রাখেন এবং রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছেন। সেইসময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন হয়ে উঠেন প্রতিবাদী কলম সৈনিক।
এরপর ১৯৮৪-ইং সালে তিনি ঢাকা ত্যাগ করে রাজশাহীতে এসে জাতীয় চার নেতার সুযোগ্য সন্তান এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এর আশ্রয়ে রাজশাহীতে অবস্থান করেন এবং সেই সময় উত্তরাঞ্চলের একমাত্র আলোচিত পত্রিকা দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নেন এবং পরে উপজেলা প্রতিনিধি এবং ঢাকা ট্রিবিয়ন পত্রিকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর তিনি জয়পুরহাট জেলা গঠিত হওয়ার আগেই তিনি নিজ জন্মভূমি জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ১৯৮৪-ইং সালে স্থাপিত প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী উপজেলা প্রেসক্লাব স্থাপিত করেন। উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ২০২২-ইং সালে তিনি হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন।
তার মৃত্যুর পর ইতিহাস যাচাই করে জানা যায় তিনি আগে ঢাকায় পড়ালেখার পাশাপাশি ১৯৬৯ সালে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার নিজস্ব সংবাদদাতা,‘সাপ্তাহিক নতুন বাংলা পত্রিকার নিজস্ব সংবাদদাতা’সাপ্তাহিক জয়পুরহাট বার্তা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক,দৈনিক দুর্জয় বাংলার পত্রিকার ব্যুরো প্রধান ও সাপ্তাহিক বালিঘাটা পত্রিকার পদে থেকে মৃত্যুকালীন সময় পর্যন্ত তিনি সাংবাদিকতা পেশায় কর্মরত ছিলেন।তাহার আরও অসংখ্য ইতিহাস রয়েছে যা আজও অজানা রয়েছে।
যে ইতিহাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় তিনি সৃজনশীল ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার এক অগ্রদূত।
এছাড়াও সামাজিক বৈষম্য, নিপীড়িত মানুষের পক্ষে তার কলম ছিলো সোচ্চার। সাংবাদিকতায় নিজের সৃজনশীলতা ও রুচিবোধের চর্চা বরাবরই অনুজদের আকর্ষণ করেছে। শুধু সাংবাদিকতায় নয় তিনি ন্যাপ কমিউনিস্ট পার্টি অধ্যাপক মুজাফ্ফর আহমেদ এর ঘনিষ্ঠ সহচর সাংবাদিক শ্রী বিরেন চন্দ্র দাস।
সাংবাদিক শ্রী বিরেন চন্দ্র দাস জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার পৌর সদরের ০৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্বর্গীয় শুকুলাল চন্দ্র দাস এর দ্বিতীয় ছেলে, মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও চার ছেলে সন্তানের জনক ছিলেন এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
জীবদ্দশায় প্রবীণ এই সাংবাদিকের হাত ধরে অনেকেই আজ সাংবাদিকতা পেশায় এসেছেন এবং তাদেরকে তিনি নিজে প্রশিক্ষিত করেছেন। বর্তমানে তারা দেশের বিভিন্ন সুনামধন্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সুনামের সহিত কর্মরত আছেন।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক শ্রী বিরেন চন্দ্র দাস দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিক্স, রক্তচাপ কিডনিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল এন্ড কলেজ (শ.মে.ক.) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন।
তার দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকীতে জাতীয় প্রেসক্লাব,জাতীয় রিপোর্টার ক্লাব,বাংলাদেশ প্রেসক্লাব,প্রেসক্লাব বাংলাদেশ,সাংবাদিক উন্নয়ন সোসাইটি অব বাংলাদেশ-(ইউএসবি),বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটিসহ দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম সংগঠনের পাশাপাশি দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার পক্ষথেকে শোকহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন। সব চেয়ে বড় বিষয় এই আজ ২৯ শে জুন তার দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী বড় পরিসরে উৎযাপন করা সম্ভব হয়নি। শুধু মাত্র ধর্মীয় রীতি অনুসারে স্বল্প পরিসরে পারিবারিক ভাবে করা হলেও -৪-৫ দিনের মধ্যে বড় পরিসরে মৃত্যুবার্ষিকী উৎযাপনের দিন-তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে। উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগণ ও পরিবার বর্গরা জানিয়েছেন।
২৯-০৬-২৪-ইং
নিরেন দাস,জয়পুরহাট
মোবাঃ ০১৯১৭-২১১১১২