মাদারীপুরে নিক্ষেপের উদ্দেশ্যে আনা বোমা ও শরীয়তপুরে ফেলে পালিয়ে গেলো সন্ত্রাসীরা।
অনেক বছর ধরেই স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাদারীপুরের কালকানি উপজেলার বাশগাড়ী ইউনিয়নে লাটু বেপারী ও নিজাম আকন গ্রুপের সঙ্গে স্থানীয় কাশেম তালুকদার গ্রুপের বিরোধ চলে আসছিল। ওই সংঘর্ষে অংশ নিতে যাওয়া ১০টি ব্যাগ ভর্তি ককটেল পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার উত্তর আকাল বরিশ গ্রামে ফেলে পালিয়ে যায় কাশেম গ্রুপের লোকজন বলে দাবি করেছেন কালকানি উপজেলার শিকার মঙ্গল ইউনিয়নের মৃধাকান্দি গ্রামের আনছার হাওলাদার। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর পক্ষে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট উপদেষ্টা বরাবরে একটি অভিযোগ করেছেন আনছার।
অভিযোগকারী আনছার হাওলাদার জানান, কাশেম হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুরের কালকানি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর, বাশগাড়ী ও শিকার মঙ্গল ইউনিয়নের একটি অংশে লুটপাট, চাঁদাবাজীসহ একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। এসব কাজে লাটু বেপারী ও নিজাম আকন বাঁধে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে কাশেম তালুকদার। সে সহযোগী রহমান হাওলাদার ও আপান কাজীকে নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে চায়। তাই কাশেম হাওলাদার, রহমান হাওলাদার ও আপান কাজীর নেতৃত্বে জামাল গাজী, ফোরকান কাজী, তেলাম কাজী, কামাল কাজী, আমিনুল তালুকদার, সুমন তালুকদার, শহীদ তালুকদার, দেলোয়ার তালুকদার, ইয়ার হোসেন শিকদার, তাইজুল তালুকদার, রাসেল শিকদার, জুলহাজ, ওয়াহিদুল মৃধা, লোকমান কাজী, জাহাঙ্গির বেপারী, আকতার শিকদার ও ইসমাইল শিকদার সহ অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা বরিবার লাটু বেপারী ও নিজাম আকনের বাড়িতে হামলা করতে চায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা প্রতিরোধ গড়ে তোলো। এক পর্যায়ে জনগনের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় লাটু বেপারী ও নিজাম আকনের বাড়িতে নিক্ষেপের উদ্দেশ্যে আনা ১০ ব্যাগ ককটেল বোমা পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যার উত্তর আকালবরিশ গ্রামের সড়কের পাশে ফেলে যায়।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী আনছার হাওলাদার বলেন, আমরা কাশেম তালুকদার বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে চাই। এদের জ্বালায় পূর্ব এনায়েতনগর, বাশগাড়ী ও শিকার মঙ্গল ইউনিয়নের একটি অংশের মানুষ অতিষ্ঠ। তারা ওই লাটু বেপারী ও নিজাম আকনের হামলা করতে গিয়ে জনগণের ধাওয়া খেয়ে অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ ও বোমা নিয়ে পালিয়েছে। শুনেছি পালিয়ে যাওয়ার সময় ডামুড্যার উত্তর আকাল বরিশ গ্রামের রাস্তার পাশে ফেলে গেছে। আর পুলিশ ও সেনাবাহিনী উদ্ধার করেছে। এ বিষয়ে আমি স্বরাস্ট উপদেষ্টার বরাবওে অভিযোগ করেছি। আমরা দ্রুত কাশেম তালুকদার সহ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, সোমবার সকালে ডামুড্যা উপজেলার উত্তর আকাল বরিশ গ্রামের সড়কের পাশে ১০টি হাতব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এসময় একটি ব্যাগের ভেতরে বেশ কিছু বোমাসদৃশ্য বস্তু দেখা গেলে পুলিশে খবর দেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে। ঢাকা থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল এসে ককটেল নিস্ক্রিয় করে।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান বলেন, এই এলাকাটি (ডামুড্যা উপজেলার আকাল বরিশ গ্রামের) পাশ্ববর্তী মাদারীপুর জেলার কালকানির সীমান্ত এলাকা। গতকাল (বরিবার) রাতে সেখানে আধিপত্য বিস্তাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছিল। ১০টি ব্যাগ ভর্তি বোমা সাদৃশ্য বস্তু পাওয়া গেছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী আসে। পরে ঢাকা থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল এসে ককটেল নিস্ক্রিয় করে।